“সবচেয়ে বেশি অভিনয় করি বোধহয় নিজের সাথে …
প্রতিদিন, প্রতি রাত আর প্রতিটা মুহুর্তে !!
একটা করে ভুল করি,
তারপর নিজেকে বুঝাই যে আমিই ঠিক …
অথবা আমিই পরিস্থিতির শিকার …
আমার আবার কিসের ভুল? …
আমি তো শুদ্ধতম মানুষ !!
জীবন থেকে দুম করে কিছু একটা হারিয়ে ফেলার পর নিজেকে মিথ্যে সান্ত্বনা দিতে থাকি, হয়তো খুঁজে পাবো …
কিংবা সে হয়তো হারানোরই ছিল … হয়তো !!
কারো চলে যাওয়ার তীব্র কষ্ট বুকের এক পাশে যত্ন করে লুকিয়ে নিজেকে বলি, যা হয় ভালোর জন্য হয় …
প্রতিবার ঐ ভালোর জন্য কষ্ট কেন পেতে হবে, সে প্রশ্নটা নিজেকে করা হয় না !!
প্রতিটা অপ্রাপ্তি কিংবা ব্যর্থতার পর নিজেকে বলি, ‘সব পেলে জীবন পানসে হয়ে যায় ‘ …
কিংবা ‘হয়তো ভাগ্যে ছিল না, তাই পাই নি’ …
কি চমৎকার মিথ্যে সান্ত্বনা !!
যখনই বুঝতে পারি, জীবনের অনেকটাই ভীষণ এলোমেলো …
চোখ বুজে নিজেকে বুঝাই, একদিন ঠিকই সব গুছিয়ে ফেলবো …
একদিন সব ঠিক হয়ে যাবে !!
মাঝরাতে ঘড়ির কাটার টিক টিক আওয়াজ যখন অসহ্য যন্ত্রণার মত কানে বাজতে থাকে,
দুই চোখের পাতা তখনও এক না হয়ে ভোরের আলো দেখার অপেক্ষায় চোখের নিচের চামড়ার ক্যানভাসে রংতুলিতে কালো রঙ মেখে সুনিপুণভাবে অসুন্দর এক আল্পনা আঁকতে থাকে…
সেই আল্পনা দেখে গোটা পৃথিবী বুঝে যায়, আমি ভালো নেই …
অথচ আমি বুঝেও বুঝি না …
নিজেকে বুঝাই, ভালো দিন আসবে …
নিজেকে বলি,
কোন একদিন সকালে ঘুমভাঙা আধবোজা চোখে দেখবো,
ম্যাজিকের মত জীবনের সবকিছু ঠিকঠাক হয়ে গেছে !!
নিজেকে বলা শত সহস্র মিথ্যে গল্পগুলো শুনতে শুনতেই আমার বেঁচে থাকা …
যেদিন এই গল্প বলা থেমে যাবে …
যেদিন এই মরীচিকার মত ম্যাজিকের জন্য আর অপেক্ষা করতে ইচ্ছে হবে না …
যেদিন মিথ্যেগুলোকে সত্যি সত্যি মিথ্যে মনে হবে,
সেদিন সব শেষ হয়ে যাবে …
বেঁচে থাকাটা সেদিন পর্যন্তই !!”